শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪১ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন গৌরনদীতে ইউএনওর নেতৃত্বে স্বেচ্ছাশ্রমে খালের কুচুরিপানা ও ময়লা পরিস্কার করল বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা বর্নাঢ্য র‌্যালি ও আলোচনা সভার মধ্যদিয়ে গৌরনদীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত আমাদের নেতা তারেক রহমান একটি সাম্যের বাংলাদেশ গড়তে চান-জহির উদ্দিন স্বপন মেয়র হারিছ গ্রেপ্তারের খবরে গৌরনদীতে সাধারন মানুষের উল্লাস ফাঁসির দাবিতে বিএনপির বিক্ষাভ মিছিল গৌরনদীতে এইচপিভি টিকা দান ক্যাম্পেইনের শুভ উদ্বোধন কাশিপুরের ড্রেজার ব্যবসায়ী সুমনের অপকর্মে কেউ খুন হলে দায় নেবে না বিএনপি
পটুয়াখালীতে গোলগাছে সফলতা

পটুয়াখালীতে গোলগাছে সফলতা

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ দক্ষিণাঞ্চলের ফসল গোল গাছ। ডগা থেকে বেরিয়ে আসছে মিষ্টি রস। সেই রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু গুড় দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র অর্থকারী ফসল গোল গাছ। এ গাছের নাম গোলগাছ হলেও দেখতে কিছুটা নারিকেল পাতার মতো। নোনাজলে জন্ম, নোনা সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। অথচ এর ডগা থেকে বেরিয়ে আসছে মিষ্টি রস। সেই রস দিয়ে তৈরি হচ্ছে গুড়। সুস্বাদু এই গুড়ের চাহিদাও রয়েছে ব্যাপক। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রায় শতাধিক কৃষক এ গাছে রস ও গুড় বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। প্রতি বছরই শীতের শুরুতে প্রতিদিন সূর্য ওঠার সাথে সাথে কৃষক বেরিয়ে পড়েন এ গাছের রস সংগ্রহ করতে। এরপর বাড়ির উঠানে বসে শুরু হয় রস দিয়ে গুড় তৈরির কাজ। সেই গুড় স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে চলছে এসব কৃষকদের জীবন-জীবিকা। কিন্তু জলবায়ুর প্রভাবসহ প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ, চাষাবাদের জমি বৃদ্ধি এবং অসাধু একশ্রেণির বনকর্মীর কারণে ক্রমশই ধ্বংস হতে বসেছে গোল গাছ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের সর্ববৃহৎ বনাঞ্চল সুন্দরবনসহ দক্ষিণ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে গোলগাছ রয়েছে। তবে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া, কুয়াকাটা, রাঙ্গাবালি, গলাচিপা, দশমিনা, বাউফল, বরগুনার আমতলী, তালতলী, পাথরঘাটা, ভোলা ও খুলনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকাসহ চরাঞ্চলে গোলগাছের বাগান রয়েছে। শীত মৌসুমে গোলবাগানের মালিকরা এর রস দিয়ে গুড় উৎপাদন করে বাড়তি অর্থ উপার্জন করে থাকেন। এর রস দিয়ে সুস্বাদু পায়েস তৈরি করা হয়। সংশ্লিষ্ট গোল গাছের মালিকরা জানান, প্রতিটি গোলগাছের পাতাসহ উচ্চতা হয় ১২ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত। এর ফুল হয় হলুদ এবং লাল। গোলপাতা একটি প্রকৃতিনির্ভর পাম জাতীয় উদ্ভিদ। এই ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদটি নদী-খালের কাদামাটি আর পানিতে প্রাকৃতিকভাবেই জন্ম নেয়। তবে গোলগাছ চাষাবাদ অত্যন্ত লাভজনক, সহজসাধ্য এবং ব্যয়ও খুব কম। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োজন হয় না। এতে কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামে প্রতিদিন সকালে কৃষকরা গোল বাগান থেকে সংগৃহীত রস বাড়ির উঠানে নিয়ে আসেন। আর সেই রস গৃহবধূরা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ছেঁকে ঢোঙ্গায় গোলের রস রাখনে। এরপর তাফালে কুটা দিয়ে আগুন ধরিয়ে রস দিয়ে তৈরি করেন গুড়। ওই গ্রামের সুনিতি রানী সকালে বাড়ির উঠানে রস থেকে গুর তৈরির কাজে ব্যস্ত। এসময় তার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বাবারে গুড়ে পাক ধরেছে। এখন কথা বলার সময় নেই। একটু বসতে হবে। অপর এক গৃহবধূ বিথীকা বলেন, প্রতি বছর এই সময় রস জাল দিতে হয়। এ থেকেই তৈরী হয় গুড়। আগে অনেক বেশি গুড় হত। এখন কমে গেছে। নবীপুর গ্রামে গোল গাছ চাষি নির্মল গাইন বলেন, প্রতিদিন কাক ডাকা ভোরে উঠে কলস নিয়ে বাগানে যেতে হয়। এরপর প্রতিটি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে হয়। অগ্রহায়ণ মাস থেকে শুরু করে রস সংগ্রহ করা হবে চৈত্র মাস পর্যন্ত। একই গ্রামের পরিমল হাওলাদার বলেন, বাগানে ৪০০ ছড়া ধরেছে। প্রতিদিন সকালে ৮ এবং বিকালে ২ কলস রস হয়। এই থেকে প্রায় ১০০ কেজি গুড় তৈরি করি। গোল গাছ চাষি নিঠুর হাওলাদার বলেন, তার বাগান থেকে প্রতিদিন ৪ কলস রস বের হয়। এতে মোট ১৩ কেজি গুড় আসে। এ গুড় কেজি প্রতি ১০০ টাকা দরে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা হয়। তবে তাদের জীবিকার একটি অংশ বছরের এ সময়ে গোল গাছ থেকে আসে বলে তারা জানিয়েছেন। বন বিভাগের কলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুস সালাম জানান, এ উপজেলার চাকামইয়া, নীলগঞ্জ ও টিয়াখালীর ইউনিয়নের লোন্দা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে ৬০ হাজার গোলগাছের বীজ রোপণ করা হয়েছে। এতে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি। এ বছর আরো ২০ হাজার গোলগাছের বীজ রোপণ করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এ গাছগুলো উপকূলীয় এলাকার প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com